জুলাই সনদ প্রশ্নে অনৈক্যে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার শঙ্কা

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৯ দুপুর

জুলাই সনদ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত না হলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এতে রাজনীতিতে অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হতে পারে।
ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া সরবরাহ করলেও দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত প্রকাশ্যে আসছে। ১০টি বিষয়ে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমাদের তো প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা নেই, সে ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের দরকার নেই। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিএনপির আপত্তি করা ঠিক হয়নি। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন হতে হবে। অন্যথায় যারা গণ-অভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি অন্যায়-অবিচার করা হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে মতবিরোধ আছে। আমার ব্যক্তিগত মত, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির অবশ্যই প্রয়োজন আছে। না হয় একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। ফলে আমাদের অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্বও দূর হবে না। অন্যদিকে সনদ নিয়ে মতবিরোধ হলে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, যা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত নিয়ে বাকশালের প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে কমন বিষয় যেমন গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে ঐকমত্য হতে পারে। এটা তো স্বাভাবিক, অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়ে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মত থাকবে। বিভিন্ন প্রায়োরিটি আছে। বাস্তবায়নের বিভিন্ন পন্থা আছে। সবাই যদি একমত হয়ে যেত, তাহলে তো বাকশালে সমস্যা ছিল না। একমত যে হবে, এই ধারণাটা ভুল ছিল।
‘এখন তো বলা যায়, সংস্কার কমিশনগুলোর পণ্ডশ্রম হয়েছে। এতগুলো সংস্কার কমিশন করেছে, পত্রিকায় লেখেছে, ৩৬৭টি সংস্কারের জন্য আশু বাস্তবায়ন করবে সে জন্য ৩৭টি অধ্যাদেশ করেছে। অধ্যাদেশ হলো সাময়িক আইন। এটা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পার্লামেন্ট হলে অধ্যাদেশ কন্টিনিউ করতে পারে না’-বলেন এই আইনজ্ঞ।
সাধারণ মানুষের অগ্রাধিকারে এসব সংস্কার নেই উল্লেখ করে শাহদীন মালিক বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ায় সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের নজির কম। পুরো জিনিসটা ঠিকমতো চিন্তাভাবনা না করে এই কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল। দারিদ্র্য, মুদ্রাস্ফীতি এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা নেই। পিআর হবে নাকি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হবে, মানুষের তো সে বিষয়ে চিন্তা নেই। তাদের উদ্বেগের বিষয় হলো দ্রব্যমূল্য। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য এসব বিষয় তো ‘নাই’ হয়ে গেছে। চাকরির বাজারে চাকরি ‘নাই’।’’