পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার অভিযোগ (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ রাত
_original_1758548314.jpg)
আর্থিক লাভ ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ করেছেন দরপত্রে অংশ নেওয়া উইমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (উইডু) প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আওয়াল হিমেল। তিনি বেশ কয়েকটি অভিযোগ উত্থাপন করে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ এর ধারা অনুসরণ করে ক্রয়কারী (PE) প্রতিষ্ঠান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনডিআর বাজেটের অধীন ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দুজন গাড়ির ড্রাইভার, একজন করে স্পিড বোট ড্রাইভার, পাম্প অপারেটর, সহকারী বাবুর্চি, তিনজন চৌকিদার, চারজন ক্লিনার, সাতজন গেট অপারেটর ও তিনজন খালাসিসহ মোট ২৩ জন আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগ প্রদানে পাউবো নেত্রকোনা কার্যালয় দরপত্র আহ্বান করেন। ইজিপিতে গত ৩ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায় দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারিত ছিল। এরই প্রেক্ষিতে ১১২৪৭৭০ নম্বর টেন্ডার আইডির কাজ পেতে সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সাত প্রতিষ্ঠান হলো- ওয়াল্ড সিকিউরিটি সলিউশন লি., উইমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (উইডু), সাউয়াদ বিসনেজ লাইন লি., মেসার্স গ্ল্যামার এন্টারপ্রাইজ, জেনিফার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, গাউছিয়া ট্রেডার্স সিকিরিটি ক্লিয়ারিং এন্ড লজিস্ট্রিক সার্ভিসেস এবং ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি.।
এ বিষয়ে ওমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (উইডু) স্বত্ত্বাধিকারী মো. আব্দুল আওয়াল হিমেল বলেন, আমি প্রথমে অভিযোগ করেছি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ এর ধারা অনুসরণ করে ক্রয়কারী (PE) প্রতিষ্ঠান নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবরে। ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি. নামক একটা অযোগ্য ফার্মকে নির্বাহী প্রকৌশলী জনবল নিয়োগের কাজ দিবে। আর্থিক বেনিফিটের জন্য একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংয়ের কোন কাজও করেনি। আউটসোর্সিং হিসট্রিতে ওই প্রতিষ্ঠান নেই ও আউটসোর্সিং এসোসিয়েশন আছে সেই এসোসিয়েশনের মেম্বারও না। এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলী ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি. প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করেই কাজ দিচ্ছে। তাছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানকে আউটসোর্সিং দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে দেখি নাই। এরকম একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার পরস্পরের যোগসাজশে এমনটা করছে।
তিনি (হিমেল) আরো বলেন, অভিযোগ আছে ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিাষ্ঠান জনবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনেকের কাছ থেকে জনপ্রতি দুই-তিন লাখ করে টাকা নিয়েছে। ঠিকাদার মাঠ পর্যায় থেকে টাকা উঠাচ্ছে যার অর্ধেক পাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাকি অর্ধেক পাবে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজে।
আমার প্রতিষ্ঠান উইডু, পিপিআরের নিয়ম অনুসরণ করে প্রসিডিউরের মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী যে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে তার প্রতিবাদে করছে। প্রথমে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের (PE) কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এখান থেকে প্রতিকার না পেলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে চীফ ইঞ্জিনিয়ার, সচিব ও সিপিটিউ এর ডিজি বা প্যানেল চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করবো। আমাদের প্রমাণাদি উপস্থাপন করে পূর্ণাঙ্গ রায় নেওয়ার চেষ্টা করবো। সন্তোষ্ট না পারলে আদালতের আশ্রয় নিবো। আশা করি আদালতের কাছ থেকে ভাল রেজাল্ট পাবার এমন আশাবাদের কথা জানালেন 'উইডু'র স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল হিমেল।
এরআগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্রয়কারী (PE) প্রতিষ্ঠান বরাবরে 'উইডু'র স্বত্ত্বাধিকারীর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ, বিজ্ঞপ্তির শর্তবলী, টিডিএস এ যে সকল শর্ত দেওয়া হয়েছে আর্থিক প্রস্তাবনা উন্মুক্তকৃত প্রতিষ্ঠান প্রায় অনেক শর্ত পূরণ করতে পারেনি। যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠানের বিগত পাঁচ বছরের আউটসোর্সিং এর সাধারণ যোগ্যতা, সম্পাদিত কাজ সম্পূর্ণ হওয়া যোগ্যতা, বার্ষিক টার্নওভার কোনটিই কোন রকম যাচাই না করেই কাজ প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
'উইডু' প্রতিষ্ঠান দরপত্রের সকল শর্ত যথাযথভাবে পূরণ করায় 'উইডু' প্রতিষ্ঠান রেসপন্সিভ সর্বনিম্ন দরদাতা ও সর্ব্বোচ্ছ স্কোরার হওয়া শর্তেও PE পরিকল্পিতভাবে নাম্বার কম দিয়ে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অযোগ্য অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে মর্মে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন অভিযোগকারী আব্দুল আওয়াল হিমেল।
পাউবোর নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অভিযোগকারীর অভিযোগটি সত্য নয়। কাজ না পাওয়ায় এমন কৌশল অবলম্বন করছে। কর্তৃপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্য সকল ডুকুমেন্ট প্রস্তুত আছে।