বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২
শিরোনাম

শেরপুরে নিখোঁজের ২০ ঘন্টা পর মৎস খামার থেকে দুই কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার


  রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ :  ১৮ জুন ২০২৫, ০২:২২ দুপুর

শেরপুরের শ্রীবরদীতে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ২০ ঘন্টা পর একটি মৎস খামারের পুকুরে ভেসে থাকা অবস্থায় দুই কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

১৮ জুন বুধবার সকালে উপজেলার তাঁতীহাটি ইউনিয়নের বটতলা মৃধাবাড়ি এলাকা থেকে নগ্ন অবস্থায় ওই শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। 

মৃত শিশুরা হচ্ছে স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার (৭) এবং অটোরিকশা চালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন (৬)। তারা দুইজনই স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার পর থেকে শিশুদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। পরে স্থানীয়ভাবে অনেক খুঁজেও তাদের সন্ধান না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ছবি দিয়ে পোস্ট করে সন্ধান দাবি করা হয়। এছাড়াও সারারাত মাইকিং করা হয়। 

এদিকে আজ বুধবার সকাল ৭টায় বটতলা মৃধাবাড়ি এলাকার একটি মৎস খামারে দুই শিশুকে নগ্ন ও মৃত অবস্থায় ভেসে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে। জানা গেছে, স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেনের জমিতে তৈরিকৃত পুকুরটি লিজ নিয়ে মৎস চাষ করছেন মোস্তফা মিয়া নামের এক ব্যক্তি। 

স্থানীয়রা এটাকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করছেন, কারণ শিশু দুটির বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে। এই পুকুরে মাসখানেক আগেও রহস্যজনকভাবে একজন মারা যায়। পরে প্রজেক্টের মালিক সেটিকে ধামাচাপা দেয়। এছাড়াও যে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে শিশুর গোসল করার মতো পরিবেশ নেই এবং সেই পুকুরটি কয়েকটি পুকুরের ভিতরে। এছাড়াও তাদের গায়ের পোশাক এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শিশু দুটির পরিবার এখনও এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি।

নিহত শিশু সকাল আক্তারের মামা মো. সাগর মিয়া বলেন, সকালের আম্মা ওই এলাকায় ব্র্যাক সেন্টারে হস্তশিল্পের কাজ করে। সে কারণে সে তার মায়ের কাছে যেতে পারে। সেই সময় গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যেতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে থানায় খবর দেই এবং নিজেও ঘটনাস্থলে আসি। আমার কাছে বিষয়টা পানিতে ডুবে মরার মতোই মনে হচ্ছে।

শিশু স্বপ্নার বাবা স্বপন মিয়া বলেন, আমি গতকাল ঢাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে ঢাকা যাইনি। এরপর থেকে খোঁজাখুঁজি করতেছি। মাইকিং করতেছি। কিন্তু কোন খোঁজ খবর পাই নাভ। আজকে সকালবেলা মেয়ের লাশ পেলাম। কিভাবে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না।

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাচ্চা দুটির গায়ের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে না।  ইতোমধ্যে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত