অবশেষে বাংলাদেশে আসছে গুগল পে

আরবান ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ০৪:৪২ দুপুর

বাংলাদেশের ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেম এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা গুগল ওয়ালেট। 'গুগল পে' নামে পরিচিত জনিপ্রয় এই ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা আগামী এক মাসের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে বলে খবর দিয়েছে একটি ইংরেজি দৈনিক।
খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করে যেকোনো এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন)-সাপোর্টেড টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য ব্যাংকও এই সেবায় যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পরিসেবা চালু হলে স্মার্টফোনই হয়ে উঠবে সেবাগ্রহিতাদের ‘ডিজিটাল ওয়ালেট’। আকাশপথে যাতায়াত, কেনাকাটা কিংবা সিনেমা দেখা-সবকিছুতেই মোবাইল ফোনেই করা যাবে লেনদেন।
সিটি ব্যাংক ও গুগল যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই সেবা চালু হলে ব্যবহারকারীরা নিরাপদে স্বাচ্ছন্দ্যে কনট্যাক্টলেস পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) টার্মিনালে সহজেই ‘ট্যাপ অ্যান্ড গো’ পেমেন্ট করতে পারবেন।
ডিজিটাল কন্টাক্টলেস পেমেন্টে বর্তমানে এগিয়ে আছে ভারত। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেশটির মোট ডিজিটাল লেনদেনের ৯৩ শতাংশ এবং লেনদেনের মূল্যের ৯২ শতাংশই ইউপিআই (ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস)-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে গুগল পে একাই লেনদেনের মোট অর্থের ৫১ শতাংশ এবং মোট লেনদেনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৩৭ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ করেছে।
চলতি বছরের ১২ মার্চ থেকে পাকিস্তানেও গুগল পে চালু হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও গুগল পে ব্যবহার হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, গুগল ওয়ালেট ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করবে না। তাই অ্যাপ চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ব্যবহারকারীরা শুধু নিজেদের ব্যাংক কার্ড অ্যাপে যুক্ত করবেন, আর সব লেনদেন তাদের নিজ নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে, ডিজিটাল ওয়ালেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন ব্যাংকগুলোকে সেবা চালুর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।
গুগল ওয়ালেট সাধারণত ব্যবহারকারীদের কেনাকাটা, অনলাইন পেমেন্ট বা 'পিয়ার-টু-পিয়ার' (ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি) ট্রান্সফারের মতো লেনদেনে কোনো চার্জ করে না, যদি তারা নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন। তবে কার্ডধারীর ব্যাংক তাদের নিজস্ব নীতিমালা, কার্ডের ধরণ এবং লেনদেনের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে ফি ধার্য করতে পারে।
তবে লেনদেনটি যদি আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে হয় অথবা বিদেশি মুদ্রা জড়িত থাকে, তাহলে ব্যাংকগুলো সাধারণত ১ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি লেনদেন ফি দিতে পারে। বাংলাদেশে যেসব লেনদেন স্থানীয়, অর্থাৎ দেশের ভেতরে হয়, সেখানে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয় না।