বউ দেখে বাড়ী ফেরা হলো না স্বামী-স্ত্রীর

ছেলেকে বিয়ে করানোর জন্য বউ দেখতে গিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সাথে ছিলেন, স্বীয় কন্যা এবং স্ত্রীর বড় ভাই। পরিবহন হিসেবে নিজেদের অটো নিয়েই গিয়েছিলেন। বউয়ের বাড়ীতে গিয়ে বউ দেখলেন। পছন্দ করে বউয়ের হাতে সেলামীও তুলে দিলেন। শেষে বিয়ের দিনক্ষন নির্ধারনের আলোচনা শেষ করে আতিথিয়তা গ্রহণের পর আনন্দেই বাড়ী ফিরছিলেন। কিন্ত পথিমধ্যে ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল দুটি তাজা প্রাণ। ঘটনা স্থলেই মারা যান স্বামী-স্ত্রী। দুর্ঘটনায় তাদের কন্যা ও কন্যার মামা বেঁচে গেলেও তারা গুরুতর আহত হন। 

মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২৫ মে) নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের খলিশাউড় ইউনিয়নের পাবই নামক স্থানে। 

নিহতরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছোছাউড়া গ্রামের অটো চালক মো: নিজাম উদ্দিন (৫৫) ও তার স্ত্রী রোকেয়া (৪৫)। এ সময় তাদের সন্তান সুমাইয়া ও সুমাইয়ার মামা নায়েব আলী বেঁচে গেলেও তারা গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন। এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকসহ চালক ও সহকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। 

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলা সদরের ছোছাউড়া গ্রামের অটো চালক মো: নিজাম উদ্দিন ছেলের বউ দেখার জন্য শ্যামগঞ্জ এলাকার একটি গ্রামে যান। সাথে ছিলেন স্ত্রী রোকেয়া, কন্যা সুমাইয়া (১৭) ও সুমাইয়ার মামা নায়েব আলী। নিজাম উদ্দিন নিজের অটো চালিয়েই সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বউ দেখে পছন্দ করে বিয়ে ঠিক করে বাড়ী ফিরছিলেন আনন্দ চিত্তেই। পথিমধ্যে শামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের পাবই এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাণ কোম্পানির দ্রুতগামী কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো-উ-১১-৭৬৯৫) মুখোমুখি চাপা দিলে ঘটনা স্থলেই অটোর চালক মো: নিজাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুন মারা যান। তাদের মেয়ে সুমাইয়া ও সুমাইয়ার মামা নায়েব আলী বেঁচে গেলেও তারা বেশ আঘাত প্রাপ্ত হন। এ সময় অটোটি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। খবর পেয়ে পূর্বধলা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে গিয়ে লাশসহ আহতদের উদ্ধার করে পূর্বধলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 

স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যূতে তার পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আহত একমাত্র মেয়ে বাকরুদ্ধ। দুই ছেলের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। দুর্ঘটনার পরপরই ঘাতক ট্রাক চালক মো: রাসেল (৩০) ও হেলপার মেহেদী হাসানকে ট্রাকসহ আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। 

স্থানীয় ফাজিলপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো: আল আমিন জানান, রাস্তার পাশে ফেলে রাখা বালুর পাশ দিয়ে গাড়িগুলো ক্রস করার সময় এ দূর্ঘটনা ঘটে।    

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ নূরুল আলম জানান, লাশ দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রাকসহ চালক ও  হেলপারকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।