শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম

চলে গেলেন নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার


  আরবান ডেস্ক

প্রকাশ :  ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ দুপুর

চলে গেলেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক দাউদ হায়দার। ৭৩ বছর বয়সে শনিবার রাতে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি বয়স্ক নিরাময় কেন্দ্রে তিনি মারা যান।

কবির ভাতিজি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সময়ে রাত ৯টা ২০ মিনিটে চাচা মারা গেছেন।

১৯৭৪ সালে দেশ ছাড়ার পর কয়েকবছর কলকাতায় কাটিয়ে ১৯৮৭ সালে সেখান থেকে জার্মানিতে চলে যান দাউদ হায়দার। এরপর থেকে সেখানেই ছিলেন তিনি। চিরকুমার দাউদ হায়দার আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গতবছর ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় আঘাত পান। সে সময় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতেও নিতে হয়। এরপর হাসপাতাল ছাড়লেও আর সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেননি দাউদ হায়দার।

১৯৫২ সালে পাবনায় দাউদ হায়দারের জন্ম। তিনি একাধারে কবি, লেখক এবং সাংবাদিক। ১৯৭৪ এর ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ১১ মার্চ তাকে আটক করে পুলিশ।

২০ মে মুক্তি দেওয়া হলেও কবিকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি তখনকার সরকার। পরদিন সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে একপ্রকার খালি হাতে কলকাতায় পাঠানো হয়। কলকাতার কঠিন বাস্তবতার মাঝে তিনি দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকায় লেখা শুরু করেন। কলকাতায় তিনি সমাদৃত হন। অন্নদাশঙ্কর রায় তাকে নিজ বাড়ীতে আশ্রয় দেন। নির্বাসিত অবস্থায় ১৯৭৯ সালে তিনি ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসে নবায়ণের জন্য পাসপোর্ট জমা দিলে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়।

দাউদ হায়দারকে ভারত থেকেও বহিষ্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৮৭ সালের ২২ জুলাই তিনি ভারত ত্যাগ করে জার্মানিতে আশ্রয় লাভ করেন। জার্মানির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টারগ্রাসের সহযোগিতায় সেখানেই ছিলেন কবি। জার্মান, হিন্দি, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, জাপানি ও স্প্যানিশ ভাষায় তিনি প্রায় ৩০টির মতো বই লিখেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ-সংগস অব ডেস্পায়ার (১৯৯২), এই শাওনে এই পরবাসে (১৯৮২), বানিশম্যান্ট (১৯৭৯), আমি পুড়েছি জ্বালা ও আগুনে (১৯৮২), এলোন ইন ডার্কনেস অ্যান্ড আদার পোয়েমস (১৯৭৮), হোল্ডিং অ্যান আফটারনুন অ্যান্ড আ লিথ্যাল ফায়ার আর্ম (১৯৮১), অবসিডিয়ান, সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য, জন্মই আমার আজন্ম পাপ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত